সাড়া ফেলেছে চাঁন মিয়ার- একটি লেবু চার কেজি! -এমন খবর অনেকেই হয়ত আজ প্রথম শুনলেন। অবাক হলেও সিলেটের হরিপুর এলাকার বাসিন্দা চাঁন মিয়া জেলা শহরে হাজির হয়েছেন এমনই এক প্রজাতির পাহাড়ী লেবু নিয়ে। কৃষিবিদদের ভাষায় যেটি জারা লেবু নামে পরিচিত।চাঁন মিয়া সিলেট শহরের রাস্তার ধারে বিভিন্ন আকারের ১৬টি লেবু নিয়ে বসেছেন।
তাকে ঘিরে উৎসুক জনতার জটলা যেন লেগেই আছে। যতটা না কেনার জন্য তার চেয়ে বেশি ভিড় জমেছে দেখার জন্য। চাঁন মিয়ার লেবুগুলোর মধ্যে এক একটি লেবুর ওজন প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার কেজি পর্যন্ত। শুধু ওজনেই নয়, দামেও বড় অঙ্ক গুণতে হবে শখের এই লেবু নিতে হলে।নির্দিষ্ট কোনো বাগানে নয়, পাহাড়ি সিলেটের গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে জংলার ধারে ফলে এ লেবু।
বাড়ি বাড়ি যেয়ে কিনে এনে শহরে এসে এসব লেবু বিক্রি করেন চাঁন মিয়া। ছোট-বড় আকার ভেদে তিনি এই লেবুর দাম হাকাচ্ছেন ৫০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত। এত দাম কেন? প্রশ্ন করতেই চাঁন মিয়ার তাৎক্ষণিক উত্তর, ‘শখের তোলা আশি টেখা’! জানালেন, ‘এর চেয়েও বড় লেবু আছে! দাম পড়বে দুই থেকে তিন হাজার টেখা।’
সিলেটে স্থানীয়ভাবে এটি শাসনি লেবু নামেই জনপ্রিয়। বৃহত্তর সিলেটের পাহাড়ি অঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির লেবুর চাষ হয়। মাটির গুনাগুন ভাল হলে জারা লেবুর ফলন ও আকৃতি বেশ বড় হয়। বাজারে প্রতিনিয়ত বাগানে চাষ করা জারা লেবু উঠলেও আকার-আকৃতি ও ওজনে চাঁন মিয়ার লেবুর সঙ্গে রয়েছে বিস্তর ফারাক।
তিন থেকে চার কেজি ওজনের লেবুর উৎস সম্পর্কে চাঁন মিয়া জানান, জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুরের পাহাড়ি ভূমি উৎলার পাড়, শ্যামপুর, বাগরখাল, মালগ্রাম, ফতেহপুর গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে এসব লেবুর চাষ করেন গৃহিনীরা।
বৃদ্ধ চান মিয়া বাসে চড়ে শহরে নিয়ে এসে বিক্রি করেন দু’টাকা লাভের আশায়। চাঁন মিয়ার জারা লেবু রসে ভরা, সিলেটে আসা পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। চিবিয়ে খাওয়ার জন্য এই লেবুর খোসাও অনেকটা মিষ্টি স্বাদের।
তাই শুধু সিলেট নয়, সিলেটের বাইরেও বিভিন্ন স্থানে এ লেবুর বেশ কদর রয়েছে। কৃষিবিদরা জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারি ও আগস্টে জারা লেবুর ফলন ভাল হয়। এ মৌসুমে সবুজ সতেজ জারা লেবু ওঠে সিলেটের কাঁচা বাজারে। এমনকি সখের এই লেবু ইংল্যান্ড, আমেরিকাসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে রফতানিও হয়ে থাকে।